১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রদানের সময়সীমা ঘোষণা ।

‘মার্চ ফর ইউনিটি’ থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র দেওয়ার আল্টিমেটাম

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র প্রদান করার জন্য আল্টিমেটাম দিয়েছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ।

মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠাতে হবে। আমাদের একমাত্র শত্রু এখন আওয়ামী লীগ।”

তিনি আরও বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিক হয়নি, এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণেও সরকার ব্যর্থ। সিন্ডিকেট বদলেছে, কিন্তু কার্যত কিছুই বদলায়নি। এভাবে চলতে দেওয়া যায় না।”

সচিবালয়ে আগুনসহ বিভিন্ন ঘটনায় বৈষম্যবিরোধীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলে হাসনাত বলেন, “আগে আমরা সতীদাহ প্রথার কথা শুনতাম, এখন দেখি নথিদাহ প্রথা। বাস্তবতা মেনে নিন, আপনাদের আপা আর ফিরবেন না। খুনি হাসিনার পুনর্বাসনও হবে না।”

পিলখানা হত্যাকাণ্ডসহ বিচারহীনতার সংস্কৃতি নিয়ে তীব্র সমালোচনা
সমাবেশে পিলখানা হত্যাকাণ্ড, আলেম-ওলামাদের হত্যা এবং গুম-খুনের বিচার নিশ্চিত করার দাবি ওঠে। জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, “জুলাই বিপ্লবের চেতনা ধারণ করে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই। যদি সরকারের প্রোক্লেমেশনে জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত না হয়, তাহলে বাংলার মানুষ তা মেনে নেবে না।”

তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদীদের বিচার যদি সরকার না করতে পারে, তাহলে জনগণ নিজেরাই ব্যবস্থা নেবে। এই ঘোষণাপত্র পাঠ সরকারের একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব।”

সংস্কার ও নতুন সংবিধানের আহ্বান
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “বাংলাদেশের মানুষ একটি নতুন সংবিধান চায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা যখন জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র পাঠের উদ্যোগ নেয়, তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পক্ষ থেকেও সমন্বিত ঘোষণাপত্র প্রদানের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। এটি আন্দোলনের একটি বড় বিজয়।”

তিনি আরও বলেন, “আগামী জাতীয় নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমে নতুন সংবিধান প্রণয়ন এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন হবে। জনগণের দাবিগুলো পূরণে প্রতিনিধিদের দায়িত্বশীল হতে হবে।”

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেন, “গণহত্যার দ্রুত বিচার, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ এবং পাচারকৃত টাকা দেশে ফেরত আনতে হবে।”

শহীদ মিনারে জনসমুদ্র
সকাল থেকেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষার্থী, তরুণ সমাজ এবং আন্দোলনে আহত ও নিহতদের পরিবারের সদস্যরা ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে শহীদ মিনারে জড়ো হন। সমাবেশে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে নেতারা আন্দোলনকে আরও জোরদার করার ঘোষণা দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *