
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভিন্ন পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর’ পদে নিয়োগ সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম স্থগিত করে দেওয়া হাইকোর্টের আদেশ আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের জন্য স্থগিত করেছেন।
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের আপিল বিভাগ আজ বুধবার এই আদেশ দেন। এতে করে ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর (টেক)’ পদে ৩১৭৩ জনের যোগদানে আর কোনো বাধা থাকছে না বলে জানিয়েছেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী।
উক্ত নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ এনে নিয়োগবঞ্চিত ১৮ জন একটি রিট আবেদন করেন। ২৭ জানুয়ারি হাইকোর্ট এই রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ‘জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টর’ (১০ম গ্রেড) পদে যোগদান–সংক্রান্ত পৃথক প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন।
সরকারপক্ষ এই আদেশ স্থগিতের জন্য আপিল বিভাগে আবেদন করে, যা গতকাল চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হয়। চেম্বার আদালত আবেদনটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান, এবং আজ সেই শুনানি শেষে আপিল বিভাগ চার সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম শুনানিতে অংশ নেন। রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মো. রুহুল কুদ্দুস ও আইনজীবী এ জেড এম নূরুল আমিন। আদালতের অনুমতি সাপেক্ষে আইনজীবী কায়সার কামালও শুনানিতে অংশ নেন।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম জানান, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত হওয়ায় জুনিয়র ইনস্ট্রাক্টরের (টেক) পদে ৩১৭৩ জনের যোগদান কার্যক্রমে আর কোনো বাধা নেই। তবে আপিল বিভাগ তিন সপ্তাহের মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্তদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের রিপোর্ট হাইকোর্টে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন এবং ছয় সপ্তাহের মধ্যে হাইকোর্টের রুল নিষ্পত্তির আদেশ দিয়েছেন।
২০২১ সালের ২৬ অক্টোবর সরকারী কর্ম কমিশন (পিএসসি) এই নিয়োগের জন্য আবেদন আহ্বান করে। ২০২২ সালের ১৮ মার্চ লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং মৌখিক পরীক্ষা হয় ২৫ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত। তবে নিয়োগ পরীক্ষায় ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস’ হওয়ার অভিযোগ এনে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর ২৬ নভেম্বর পিএসসি চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ করে এবং প্রার্থীদের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের অধীন ১০ম গ্রেডে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করে।
তবে নিয়োগবঞ্চিতদের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট ২৭ জানুয়ারি ৪৩টি পৃথক প্রজ্ঞাপনের কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন, ফলে ৩,৫৩৪ জনের নিয়োগ কার্যক্রম আটকে যায়। তবে আপিল বিভাগের নতুন আদেশের ফলে চার সপ্তাহের জন্য হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ কার্যকর থাকবে না, এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর নিয়োগ কার্যক্রম চলবে। হাইকোর্টের রুলে ২৩ জানুয়ারির প্রজ্ঞাপনগুলোর আইনগত বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে, যা ছয় সপ্তাহের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।