
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাম্প্রতিক কার্যক্রম ও অন্যান্য সংবাদ
১. সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা:
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্ব, জনগণের নিরাপত্তা, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় নিরলসভাবে কাজ করছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা, রোহিঙ্গা শিবিরের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং বিদেশি কূটনীতিকদের সুরক্ষায় তাদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। গত ৫০ দিনে ১৭২টি অবৈধ অস্ত্র ও ৫২৭ গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, শিল্পাঞ্চল, সড়ক অবরোধ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ ৪২টি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীর ভূমিকা উল্লেখযোগ্য।
২. অপরাধ দমন ও গ্রেপ্তার:
সাম্প্রতিক ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গত এক মাসে ২,১৪২ জন অপরাধীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চাঁদাবাজি, মব লিনচিং ও রাহাজানির মতো ঘটনায় উল্লেখযোগ্য হ্রাসের কথা উল্লেখ করেন সেনা সদরের কর্নেল শফিকুল ইসলাম।
৩. চিকিৎসা সহায়তা ও মানবিক ভূমিকা:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৩,৮৫৯ জনকে সেনাবাহিনীর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৪১ জন এখনো চিকিৎসাধীন। এছাড়া, পার্বত্য অঞ্চলে কুকি-চিন গোষ্ঠীর অত্যাচারে বাস্তুচ্যুত ৮১ জন বম পরিবারের সদস্যকে পুনর্বাসনে সহায়তা করা হয়েছে।
৪. মোহাম্মদপুর ও বনানীর ডাকাতি ঘটনায় তদন্ত:
ঢাকার মোহাম্মদপুর ও বনানীতে সংঘটিত ডাকাতি ঘটনায় কয়েকজন সেনাসদস্য জড়িত থাকার অভিযোগে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কর্মরত সদস্যদের সেনা আইনে এবং সাবেক সদস্যদের সাধারণ আইনে বিচার করা হবে বলে নিশ্চিত করা হয়েছে।
৫. রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণ ও সিন্ডিকেট মোকাবিলা:
আসন্ন রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারি মন্ত্রণালয় ও বিশেষ দলের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সরকারের নির্দেশনা পেলে সেনাবাহিনী সহায়তা করবে বলে জানানো হয়।
৬. পার্বত্য অঞ্চলে সেনাবাহিনীর সাফল্য:
বান্দরবানের লামায় অপহৃত ২৬ রাবারশ্রমিকের উদ্ধার অভিযান চলমান। এছাড়া, কুকি-চিন গোষ্ঠীর দুটি ক্যাম্প ধ্বংস ও তাদের দৌরাত্ম্য কমানো হয়েছে।
ওয়েব সংবাদ মিশ্রণ:
- সাইবার নিরাপত্তা জোরদার: সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেনাবাহিনী সাইবার হুমকি মোকাবিলায় বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে, যা ডিজিটাল অপরাধ ও ফেক নিউজ প্রতিরোধে কাজ করছে।
- বন্যা প্রতিরোধে সহায়তা: গত সপ্তাহে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সেনাবাহিনীর প্রকৌশলী দল ত্রাণ কার্যক্রমে অংশ নিয়েছে এবং জরুরি সেতু মেরামত করেছে।
- আন্তর্জাতিক সম্মান: জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশি সেনাদের অবদানের জন্য সম্প্রতি জাতীয় পর্যায়ে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়েছে।
৭. ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:
সেনাবাহিনী আগামী মাসগুলিতে দেশজুড়ে স্মার্ট সার্ভিলেন্স সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা করছে, যা অপরাধ প্রবণ এলাকাগুলোতে রিয়েল-টাইম মনিটরিং নিশ্চিত করবে।
সংক্ষেপে:
সেনাবাহিনীর বহুমুখী কার্যক্রম দেশের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা ও মানবিক সহায়তায় তাদের অঙ্গীকারের প্রতিফলন। অপরাধ দমন থেকে শুরু করে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা—প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের ভূমিকা জাতীয় স্বার্থে অগ্রগণ্য।