সচিবালয় ঘেরাও করার ঘোষণা বিডিআর সদস্যদের

বিডিআর সদস্যদের মুক্তি ও চাকরি ফেরতের দাবিতে সচিবালয় ঘেরাওয়ের ঘোষণা

পিলখানায় বিদ্রোহের অভিযোগে চাকরিচ্যুত ও মামলার আসামি হয়ে কারাবন্দী বিডিআর সদস্যদের মুক্তি এবং চাকরি পুনর্বহালের দাবিতে এবার সচিবালয় ঘেরাও করার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনকারীরা। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক মাহিন সরকার। এর আগে আন্দোলনরত বিডিআর সদস্যদের শপথ পাঠ করান তিনি। আল্টিমেটাম শেষ হওয়ার পর এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

এদিকে, সাবেক বিডিআর সদস্যরা তাদের পূর্ববর্তী ছয় দফা দাবির সঙ্গে আরও দুটি নতুন দাবি যুক্ত করেছে। বর্তমানে তাদের মোট আট দফা দাবি নিম্নরূপ:

১. চাকরি পুনর্বহাল ও ক্ষতিপূরণ: পিলখানার ভেতরে ও বাইরে ১৮টি বিশেষ আদালত ও অধিনায়কের সামারি কোর্ট গঠন করে যেসব বিডিআর সদস্যদের চাকরিচ্যুত করা হয়েছে, তাদের সবাইকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে হবে। এছাড়া ক্ষতিপূরণ ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে।

২. মামলা বাতিল ও বন্দিদের মুক্তি: ইতিমধ্যে হত্যা মামলায় খালাসপ্রাপ্ত এবং সাজা শেষ হওয়া জেল বন্দি বিডিআর সদস্যদের অনতিবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে। উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রহসনের বিস্ফোরক মামলা বাতিল করতে হবে।

৩. স্বাধীন তদন্ত ও নিরপরাধীদের মুক্তি: গঠিত কমিশন যেন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারে, সেজন্য প্রজ্ঞাপনে উল্লেখিত শব্দ এবং কার্যপরিধি ২-এর (ঙ) নং ধারা বাদ দিতে হবে। স্বাধীন তদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে অন্যায়ভাবে দণ্ডিত সব নিরপরাধ বিডিআর সদস্যদের মুক্তি দিতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের সঠিক কারণ উদঘাটন করে মূল ষড়যন্ত্রকারী ও হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

৪. হত্যাকাণ্ডের বিচার ও মৃত্যুর কারণ তদন্ত: পিলখানা হত্যাকাণ্ডে শহীদ হওয়া ৫৭ সেনা কর্মকর্তা, ১০ জন বিডিআর সদস্যসহ সর্বমোট ৭৪ জনের হত্যাকারীর বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জেলের ভেতর মারা যাওয়া প্রত্যেক বিডিআর সদস্যের মৃত্যুর সঠিক কারণ উন্মোচন করতে হবে। অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে।

৫. চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তাদের পুনর্বহাল: পিলখানা হত্যাকাণ্ডে অন্যায়ভাবে চাকরিচ্যুত সেনা কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনতে হবে।

৬. শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের লাশ পুনরায় তদন্ত: সব শহীদ সেনা কর্মকর্তাদের লাশ পুনরায় তদন্তের মাধ্যমে সঠিকভাবে শনাক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।

৭. বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনা: স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস ধারণকারী বিডিআর নাম ফিরিয়ে আনা।

৮. জাতীয় দিবস ঘোষণা ও শহীদ পরিবারের নিরাপত্তা: পিলখানার হত্যাকাণ্ডে সব শহীদের স্মরণে জাতীয় দিবস ঘোষণা করতে হবে। শহীদ পরিবারের সব ধরণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিগুলো বাস্তবায়নের জন্য সরকারের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে তাদের আন্দোলন আরও জোরদার করার ঘোষণা দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *