
মাগুরায় ধর্ষণের শিকার শিশুটির সব ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সরিয়ে ফেলতে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) কে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ রোববার বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
এদিকে, ধর্ষণের ঘটনায় শিশুটির মা গত শনিবার মাগুরা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় শিশুটির বড় বোনের শ্বশুর মো. হিটু শেখ (৪২), তাঁর স্ত্রী জাহেদা (৪৫) এবং তাঁদের দুই ছেলে সজিব (১৮) ও মো. রাতুল শেখকে (২০) আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার অনুযায়ী, শিশুটির মা অভিযোগ করেছেন যে চার মাস আগে তাঁর বড় মেয়ের বিয়ে হয় হিটু শেখের ছেলে সজিবের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকে হিটু শেখ শিশুটির মায়ের কাছে কুপ্রস্তাব দিতে থাকেন। এই ঘটনা সম্পর্কে অন্যান্য আসামিরাও অবহিত ছিল।
মামলার বাদী আরও উল্লেখ করেন, গত ১ মার্চ তাঁর ছোট মেয়ে (৮ বছর) বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যায়। এরপর ৬ মার্চ সকাল ১০টার দিকে বড় মেয়ে মোবাইল ফোনে জানায় যে ছোট বোন অসুস্থ। পরে তিনি বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি মাগুরা সদরের নীজনান্দুয়ীতে যান। সেখানে তিনি জানতে পারেন, ৫ মার্চ রাতে শিশুটি বড় বোন ও তার স্বামীর সঙ্গে একই কক্ষে ঘুমিয়েছিল। গভীর রাতে বড় বোন ঘুম থেকে জেগে দেখে শিশুটি মেঝেতে পড়ে আছে। শিশুটি তখন বড় বোনকে জানায় যে তার গোপনাঙ্গে ব্যথা শুরু হয়েছে। এরপর শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ফরিদপুর এবং পরে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
বাদীর মা আরও বলেন, মাগুরা সদর হাসপাতালে শিশুটিকে গাইনি বিভাগে ভর্তি করা হয় এবং প্রাথমিক ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়। এরপর থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশুটির জরুরি চিকিৎসা চলছে। এই প্রক্রিয়ায় সময় লাগার কারণে মামলা দায়ের করতে দেরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। শিশুটির অবস্থা এখনও আশঙ্কাজনক।
এই ঘটনায় হাইকোর্টের নির্দেশনা এবং মামলার প্রক্রিয়া চলমান থাকায় শিশুটির ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদন্ত ও পদক্ষেপ জোরদার করা হয়েছে।