নরসিংদীতে অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে বিবাদে যুবক কুপিয়ে নিহত

নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ভাড়া নিয়ে বিবাদের জেরে এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ওই যুবকের বাবা। গতকাল সোমবার রাত আটটার দিকে উপজেলার ডাঙ্গা ইউনিয়নের জয়নগর গ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।

নিহত যুবকের নাম সুমন মিয়া (৩০)। তিনি জয়নগর গ্রামের রাজমিস্ত্রি আলম মিয়ার ছেলে। আহত আলম মিয়াকে (৫৫) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল বিকেল চারটার দিকে জয়নগর গ্রামের সড়কে তিন যুবক—তারেক, আইয়ুব ও মোমেন—রিকশার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা সেখানে যাত্রী নামায়। তিন যুবক রিকশাচালককে ডাঙ্গা বাজারে যাওয়ার প্রস্তাব দিলে চালক রাজি হননি। ঠিক তখন সুমনের চাচা মুকুল মিয়া দৌড়ে এসে রিকশাচালককে অনুরোধ করেন, যেন তিনি তার অসুস্থ মাকে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যেতে পারেন। রিকশাচালক এতে রাজি হলে তিন যুবক ক্ষিপ্ত হয়ে চালক ও মুকুল মিয়ার সঙ্গে তর্কে জড়ান।

এ ঘটনার জেরে রাত আটটার দিকে তিন যুবক সহযোগীদের নিয়ে মুকুল মিয়ার বাড়িতে হামলা চালায়। মুকুল মিয়া বাড়িতে থাকলেও বের হননি। তবে চাচার বাড়িতে হইচই শুনে সুমন মিয়া ও তার বাবা আলম মিয়া বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় হামলাকারীরা সুমন ও আলম মিয়াকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়।

স্থানীয় লোকজন আহত বাবা-ছেলেকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুমন মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। আলম মিয়াকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

নরসিংদী জেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক শওকত হাসান বলেন, সুমন মিয়ার হাত, বুক ও পায়ে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন ছিল। আলম মিয়ার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

নিহতের চাচা মুকুল মিয়া বলেন, “মাকে ডাক্তার দেখাতে নেওয়ার সময় রিকশা ভাড়া নিয়ে তারেক, আইয়ুব ও মোমেনের সঙ্গে তর্ক হয়েছিল। ওই রিকশাচালক কেন তাদের না নিয়ে আমাদের নিল, এ নিয়েই ছিল বিবাদ। এর জেরে রাতে তারা আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে সুমনকে হত্যা ও তার বাবাকে আহত করেছে। আমি এই হত্যার বিচার চাই।”

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনির হোসেন বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য সুমনের লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে তদন্ত চলছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *