কুমিল্লায় একই স্থানে ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দুই প্রবাসীর গাড়ি ডাকাতির শিকার

৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে একই স্থানে দুই প্রবাসীর গাড়ি ডাকাতি: পিকআপ ভ্যানে চালায় হামলা, পুলিশের তদন্ত তৎপর

কুমিল্লা, ২ মার্চ (স্থানীয় সময়): মহাসড়কের একই স্থানে মাত্র ৪৮ ঘণ্টার ব্যবধানে দুটি সশস্ত্র ডাকাতির ঘটনায় কুয়েত ও মালয়েশিয়া প্রবাসী দুই নাগরিকের মূল্যবান মালামাল লুট হয়েছে। গত শনিবার ভোরে চৌদ্দগ্রাম থানা এলাকার ফাল্গুনকড়া মাজার সংলগ্ন মহাসড়কে মালয়েশিয়া প্রবাসী বেলাল হোসেনের ভাড়া করা গাড়িতে হামলা চালায় ডাকাত চক্র। এ ঘটনার দুদিন আগে একই স্থানে কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলামের গাড়িও লুট করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, দুটি ঘটনায় একই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে: পিকআপ ভ্যান দিয়ে গাড়ি ধাক্কা দেওয়া, অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মালামাল ছিনিয়ে নেওয়া।

শনিবারের ঘটনা: মালয়েশিয়া প্রবাসী বেলাল হোসেন ঈদ উদযাপনে তিন বছর পর শুক্রবার রাতে দেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকে প্রাইভেটকার ভাড়া করে ফেনীর দাগনভূঁইয়া উপজেলার শরিফপুর গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন। শনিবার ভোরে ফাল্গুনকড়া মাজার এলাকায় পিকআপ ভ্যানবাহী ডাকাত দল তার গাড়িতে ধাক্কা দেয়। গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার উপক্রম হলে ডাকাতরা পিকআপ থেকে নেমে ধারালো অস্ত্রের মুখে বেলালের ৫টি মোবাইল, ১ ভরি স্বর্ণ, ৩ হাজার মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত (প্রায় ৬ লাখ টাকা মূল্যের মালামাল) লুট করে। এমনকি তার পাসপোর্টও ছিনিয়ে নেয়, যা পরে কষ্টে ফেরত পান তিনি। চালক জাবেদ খানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশের বক্তব্য: চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহাম্মেদ জানান, ডাকাতরা পিকআপ ভ্যানে ত্রিপল জড়িয়ে আসে, যা সিসি ক্যামেরা ফুটেজে ধরা পড়েছে। পুলিশ সুপার খাইরুল আলম বলেন, “ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ভিকটিমের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। ডাকাত চক্র শনাক্তে তদন্ত চলছে।”

এর আগের ঘটনা: গত ২৭ ফেব্রুয়ারি একই স্থানে কুয়েত প্রবাসী নাইমুল ইসলামের গাড়ি ভাঙচুর করে নগদ টাকা ও মালামাল লুট করা হয়। উভয় ঘটনায় ডাকাতরা পিকআপ ব্যবহার করে দ্রুত পালিয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

নিরাপত্তা প্রশ্নে উদ্বেগ: স্থানীয়রা জানান, মহাসড়কের নির্জন এলাকাগুলোতে রাতের আঁধারে ডাকাতির ঘটনা বেড়েছে। প্রবাসীরা প্রায়ই লক্ষ্য হওয়ায় পুলিশের নজরদারি ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের দাবি উঠেছে।

পরবর্তী পদক্ষেপ: পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ডাকাত চক্রের সদস্যদের শনাক্তের চেষ্টা করছে। এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন থানা কর্তৃপক্ষ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *